Friday, June 17, 2016

ইসলামিক পদ্ধতিতে তালাক

  • তালাক একটি জঘন্যতম বৈধ কাজ। নবী পাক (সাঃ) ইহাকে চরমভাবে ঘৃনা করতেন। তালাক অর্থ বিবাহ বিচ্ছেদ (Divorce)। কোন কারণ বশতঃ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হতে থাকলে যদি চরম পর্যায়ে চলে যায় সেক্ষেত্রে ইচ্ছা করলে তারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে, যাকে তালাক বলা হয়।
  • শুধু মুখ দিয়ে মেশিনের মত পটপট করে ‘তালাক, তালাক, তালাক’, বললেই তালাক হয় না। আর ইচ্ছা হলেও তালাক দেওয়া যায় না। যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে সূরা তালাকের মধ্যে এরশাদ করেন,
 অর্থাৎ ‘হে নবী! (উম্মতকে বলুন) তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা করো তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাাহকে ভয় করো তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয় যদি না তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত হয় এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমা লংঘন করে, সে নিজেরই অনিষ্ট করে তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ এর পর কোন নতুন উপায় করে দেবেন (সূরা তালাক, আয়াত নং)
  • উল্লে­খিত আয়াতে দেখা যাচ্ছে যে,
  1. স্ত্রীকে তালাক দিলে ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে (ইদ্দত হলো মহিলাদের রজঃস্রাব বা মাসিক চক্র)
  2. ইদ্দত গননা করতে হবে (কয়টি ইদ্দত গণনা করতে হবে সে সম্পর্কে কিছুক্ষন পরে আয়াত পেশ করছি)
  3. কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে (যিনা/ব্যভিাচার) লিপ্ত না হলে স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করো না অর্থাৎ তালাক দেয়া যাবে না
  4. তিনটি বিষয় হলো আল্লা কর্তৃক তালাকের নির্ধারিত সীমা, যা লংঘন করলে নিজের অর্থাৎ তালাক প্রদানকারীর অনিষ্ট হবে
  5. উল্লে­খিত তিনটি সীমা তালাকের জন্য নির্দিষ্ট এর হেরফের হলে তালাক হবে না
  6. আল্লা কোন নতুন উপায় করে দেবেন এর ব্যাখ্যায় তাফসীরে মারেফুল কুরআনে বলা হয়েছেস্বামীর   অন্তরে তালাকের ব্যাপারে অনুতপ্ত সৃষ্টি হবে ফলে হয়তো তারা আবার সংসার করতে পারবে
  •  এবার সূরাতালাকের ২নং আয়াতের দিকে লক্ষ্য করিমহান আল্লাহ এরশাদ করেন, 
  • অর্থাৎ ‘অতঃপর তারা যখন তাদের ইদ্দতকালে পৌঁছে, তখন তাদেরকে যথোপযুক্ত পন্থায় রেখে দেবে অথবা যথোপযুক্ত পন্থায় ছেড়ে দেবে এবং তোমাদের মধ্য থেকে দুজন নির্ভরযোগ্য লোককে সাক্ষী রাখবে (সূরা তালাক)
    উল্লে­খিত আয়াতে দেখা যাচ্ছে যে,
  1. ইদ্দতকালে পৌছলে স্ত্রীকে রাখাও যাবে অর্থাৎ স্বামীস্ত্রীর মিল হলে রাখা যাবে অথবা মনের অমিল হলে তালাক দিবে
  2. তালাকের ক্ষেত্রে দুই জন সাক্ষী রাখতে হবে অর্থাৎ একা একা তালাক তালাক উচ্চারণ করলে তালাক হবে না আবার পুনরায় সংসার করতে হলেও দুই জন সাক্ষী রাখতে হবে যদি কেউ বলে তালাকের জন্য কোন স্বাক্ষীর দরকার নেই, পুরুষ তালাক উচ্চারণ করলেই তালাক হবে তবে তা সম্পূর্ণ কুরআন বিরোধী অর্থাৎ কুফুরী আকিদা
  •   এবার সূরা তালাকের ৪নং আয়াতের দিকে লক্ষ্য করিমহান আল্লাএরশাদ করেন, 
অর্থাৎতোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত যে আল্লাকে ভয় করে, আল্লা তার কাজ সহজ করে দেন (সূরা তালাক)
উল্লে­খিত আয়াতে দেখা যাচ্ছে যে, 
বালেগা নারীদের ক্ষেত্রে ইদ্দত কাল হবে তিন মাসিক বা তিন রজস্রাব
  1. নাবালেগা নারীদের ক্ষেত্রে ইদ্দত কাল হবে তিন মাস
  2. গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ইদ্দতকাল হবে সন্তান প্রসব পর্যন্ত
উপরোক্ত সূরা তালাকের তিনটি আয়াত বিশ্লেষণ করলে আমরা পাই যে, স্পষ্ট নির্লজ্জ কাজ পরিলক্ষিত না হলে স্ত্রীকে তালাক দেয়া যাবে না আর তালাক দিলে সেক্ষেত্রে তিনটি ইদ্দত তথা মাসিক অপেক্ষা করতে হবে প্রথম মাসে তালাক দিবে, যদি এর মধ্যে স্বামীস্ত্রীর মিল হয়ে যায় তবে তারা পুনরায় সংসার করবে আর যদি মিল না হয় তবে দ্বিতীয় মাসে তালাক দিবে এবং অপেক্ষা করবে যদি এবার মিল হয়ে যায় তবে সংসার করবে অথবা তৃতীয় মাসে পুনরায় তালাক দিবে তৃতীয় মাস পূর্ণ হলে তারা যদি মনে করে সংসার করবে অথবা বিচ্ছিন্ন হবে তাহলে দুজন স্বাক্ষী রেখে চূড়ান্ত ফয়সালা করবে

অযু ভাঙ্গার কারন সমুহ  

No comments:

Post a Comment